শেরপুর-জামালপুর এক্সপ্রেস
শেরপুর-জামালপুর ভ্রমণের প্রথম প্ল্যান করি ২০১৬ সালে। ঢাকার খুব কাছে এবং কম খরচেই ঘুরে আসা যাবে ভেবে যাবো যাবো করেও এতদিন যাওয়া হচ্ছিলো না। অবশেষে ২৬ এপ্রিল, ২০১৯ তারিখ সব দ্বিধা-দ্বন্দ দূরে ঠেলে ঘুরে আসলাম যমুনা নদীর পাড়ের জামালপুর ও আকাঁবাকাঁ টিলার জেলা শেরপুর থেকে।
ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেই যদি কোন ভ্রমণসঙ্গী পাওয়া যায়! আমার ইচ্ছা ছিলো একসাথে দুই জেলা ঘুরে দেখার। একা হলে খরচ বেড়ে যাবে, সেজন্য ভ্রমণ সঙ্গী খোঁজা। বেশ কয়েকজন আগ্রহ দেখালেও শেষ পর্যন্ত স্কুল বন্ধু সজীব আর ভার্সিটির ছোট ভাই মুশফিকুলকে নিয়ে রওনা হই।
২৬ এপ্রিল, ২০১৯ তারিখ সকালে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে আমাদের যাত্রা শুরু হয়। শেরপুর-জামালপুর-ময়মনসিংহ যারা নিয়মিত যাতায়াত করেন তারা খুব ভালোভাবেই জানেন ওই রুটে ট্রেনের টিকেট পাওয়া সোনার হরিনের মত। সেখানে টিকেট না কেটেই রেলস্টেশন পৌঁছাই ট্রেন ছাড়ার ১০ মিনিট আগে। সাথের দুইজনকে আশ্বাস দেই একটা ব্যবস্থা হবে তোরা ট্রেনের কাছে গিয়ে দাঁড়া। ব্যবস্থা হয়েছিলো!
যাত্রা শুরু
সকাল ৭.৪৩ মিনিটে তিস্তা এক্সপ্রেস ছেড়ে দিলো। দুপাশের দৃশ্য দেখতে দেখতে চলতে থাকলাম। বৃষ্টি না হওয়ার প্রখর রোদে চারপাশ ছিলো ধুলোময়। বাংলার সব ধূলো যেন জানালা দিয়ে শরীরে মাখামাখি করছিলো। দুপুর ১.০৭ মিনিটে যখন দেওয়ানগঞ্জ রেলস্টেশন পৌঁছালাম তখন সেলফি তুলতে গিয়ে দেখি চুল-দাঁড়ি সব সাদা হয়ে গেছে।
এই ট্যুরে আমরা দুই দিনে দুটো জেলা ঘুরে দেখার চেষ্টা করেছি। প্রথমদিন জামালপুর এবং দ্বিতীয় দিন শেরপুর।
জামালপুর জেলা ভ্রমণ
আমার লেখা ই-বুক কিনতে এখানে ক্লিক করুন
জিল বাংলা সুগার মিল
দেওয়ানগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে অটোতে করে প্রথমেই চলে যাই সুগার মিলে। অফ সিজন হওয়ায় সুগার মিল বন্ধ ছিলো। গার্ডের দায়িত্বরত আব্বাস ভাইয়ের সাথে বেশ খাতির হয়ে যায় অল্প সময়েই। চিনিকল যখন খোলা থাকে তখন যাওয়ার দাওয়াত দিলেন। ফোন নাম্বার নিয়ে চলে আসলাম।
যমুনা নদীর পাড়ে বসে দুপুরের খাবার
চিনিকলের চারপাশ ঘুরে চলে গেলাম যমুনা নদীর পাড়ে। দূর থেকে দেখতে শান্ত মনে হলেও কাছে গেলে দেখা যায় বিপদজনক সব ঘূর্ণি নদীর পাড় জুড়ে! নদীর এই অংশের নাম বাহাদুরাবাদ। ওপাড়ে গাইবান্ধা জেলা।
নদীরপাড় ধরে অনেকদূর পর্যন্ত ঘুরাঘুরি করে পেট ক্ষুধার কথা জানান দিতে ঘাটের কাছে এক ছাপড়া দোকানে খেতে বসলাম। ব্র্যাকেট মাছ(সিলভার কার্প), লালশাক, ভাত দিয়ে দুপুরের খাবার হলো। যতটা মজা হবে ভেবেছিলাম স্বাদ তেমন ভালো ছিলো না। অবশ্য এব্যাপারে সুগার মিলের আব্বাস ভাই আগেই সর্তক করেছিলেন। তবু নতুন খাবারের স্বাদ নেওয়া।
নদীর এখানে দুপুরে না এসে বিকেলের দিকে আসলে সবচেয়ে ভালো হত। আবার হয়তো কোন একদিন আশা হবে এইভেবে পরবর্তী গন্তব্যে রওনা হলাম।
ইসলামপুর বাজারে তৃপ্তি পান
দেওয়ানগঞ্জ থেকে সরাসরি জামালপুর শহরে না গিয়ে প্রথমে গেলাম ইসলামপুর বাজারে। তুষার ভাই বলে দিয়েছিলো যেন এখানকার পান খেয়ে যাই। আমার পান খাওয়ার অভ্যাস নেই, অনেকে শখ করে মিষ্টি পান খায়, আমি সেটাও খাই না। শুধু দেখার জন্যই আসা। মুশফিকুল বললো পান খাবে। ২০ টাকার পানে যে পরিমান মশলা দিলো এবং বানানোর স্টাইল দেখে পছন্দ হয়ে গেলো। আমিও একটা নিলাম। ঢাকায় এই সাইজের একটা পানের দাম হবে কমপক্ষে ৬০-৮০ টাকা। স্বাদ আসলেই ভালো।
শাহ জামালের মাজার
ইসলামপুর বাজার থেকে লোকাল সিএনজিতে করে চলে আসলাম জামালপুর শহরের কাছেই শাহ জামালের মাজারে। বড়ই অদ্ভুত এক জায়গা। আমরা যখন পৌঁছাই তখন মুসলমানের চেয়ে হিন্দু নারীর সংখ্যাই ছিলো বেশি। তারা পরম ভক্তিতে মাজারে সেজদা দিচ্ছে।
মাজারের আশপাশে ঘুরাঘুরি করতে গিয়ে এক বাঁধের সন্ধান পাই। দূর থেকে দেখে মনে হচ্ছিলো ওইপাড়ে নদী আছে। নদী দেখার লোভে প্রধান রাস্তা থেকে মিনিট দশেকের বেশি সময় ধরে হেঁটে এসে দেখি কোন নদী নাই। যারপরনাই হতাশ হই।
দয়াময়ী মন্দির
মাজার ঘুরে জামালপুর শহর পৌঁছাতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। সন্ধ্যার আধোঁ আলোয় দেখা মিলে দয়াময়ী মন্দিরের। আহসান মঞ্জিলে নতুন যে রঙ করা হয়েছে এখানেও সেই একই রঙ করা। এটাই কি আদি রঙ নাকি নতুনভাবে করা হয়েছে বোঝা গেলো না।
বাহির থেকে মন্দির দেখে এরপর গেলাম পাশেই এক পুরির দোকানে। পুরি, টিকা, পেঁয়াজু দিয়ে ভরপেট নাস্তা করলাম। কেউ জামালপুর গেলে অবশ্যই এই দোকানে যাওয়ার পরামর্শ থাকবে। মন্দিরের অপজিটে ছোট্ট একটা দোকান। দেখলেই চিনতে পারবেন।
সারাদিন জামালপুরের বিভিন্ন স্থান ঘুরে এবার রওনা হলাম শেরপুর শহরের দিকে। আগামীকাল সারাদিন শেরপুরের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখবো।
শেরপুরে রাত কাটানো
রাতে শেরপুর পৌঁছে প্রথমেই হোটেল ঠিক করলাম। প্রথমে গেলাম হোটেল সম্পদে। বেশ পুরনো একটা হোটেল। দামে সস্তা হলেও আমাদের পছন্দ হলো না। আয়শার ইন নতুন হোটেল বিধায় রুম, টয়লেট সবই নতুন। এটা বেশ পছন্দ হলো। কিন্তু এখানে ভাড়া তুলনামূলক বেশি। এছাড়া দুইজনের রুমে আমরা ৩ জন থাকবো জানালাম। সব মিলিয়ে অনেকক্ষন দামাদামি করার পর তারা রাজি হলো। এই দামাদামি আমার বেশ পছন্দ হলেও ছোট ভাই অবাক হইছে আর আমার বন্ধু বিরক্ত হইছে।
রাতে থাকার ব্যবস্থা করে বের হলাম পেটের ব্যবস্থা করতে। তুষার ভাই বলে দিয়েছিলো হোটেল শাহজাহানের খাসির মাংস অনেক ভালো। উনার কথা আসলেই সত্যি। খাবার আসলেই অনেক ভালো। ডালটাও অনেক ভালো ছিলো।
পেট শান্তি করে গেলাম মিষ্টি মুখ করতে। নিউমার্কেটের অনুরাধা হোটেলে ছানার পায়েশ খাওয়ার কথা বলে দিয়েছিলো। গরম গরম ছানার পায়েশ পরোটা দিয়ে নাকি অসাধারন স্বাদ। পেট ভরা থাকায় পরোটা না নিয়ে শুধু মিষ্টি নিলাম। অনেকটা রসমালাইয়ের মত তবে স্বাদ ভালো। মিষ্টি খেতে খেতে ক্যাশে বসে থাকা ভদ্রলোক জিজ্ঞাসা করলো আমরা কি তুষার ভাইয়ের পরিচিত নাকি? সম্মতি জানাতেই নিজে উঠে গিয়ে মালাই চপ নিয়ে আসলো। বললো, এটা আমার পক্ষ থেকে। উনার আতিথিয়েতায় বেশ অবাক হলাম। খাওয়ার পাট চুকিয়ে রুমে চলে আসলাম। শহরটা ঘুরে দেখার ইচ্ছা থাকলে, গায়ে জোর ছিলো না।
শেরপুর ঘুরে দেখা
আমরা যখন ঘুরতে যাই তখন অনেকেই বলেছিলো এই গরমে ঘুরতে যাওয়াটা বোকামি। ঢাকায় তখন ৩৫-৩৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা। আমাদের ভ্রমণকে আরামদায়ক করতেই যেন বৃষ্টির আগমন। কারন আজ যেসব জায়গায় যাবো সবগুলোতেই অনেক হাঁটতে হবে আর গরম থাকলে অবস্থা খারাপ হয়ে যেত।
সারাদিনে গজনী অবকাশ কেন্দ্র, মধুটিলা ইকো পার্ক, নকুগাঁও স্থল বন্দর, নালিতাবাড়ী বাজার ঘুরে শেরপুরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সিএনজি রিজার্ভ করলাম। ১৫০০-২০০০ টাকার নিচে কেউ যাবেই না। তুষার ভাই বলে দিয়েছিলো ১০০০ টাকার মধ্যে ঠিক করতে। অনেক কথা বলার পর ১২০০ টাকায় একজন রাজি হলো। শুরু হলো শেরপুর ভ্রমণ।
গজনী অবকাশ কেন্দ্র
প্রথমেই গেলাম গজনী অবকাশ কেন্দ্র। যাওয়ার রাস্তা খুবই সুন্দর। আকাবাঁকা রাস্তার দুইপাশে টিলা। সকালে বৃষ্টি হওয়ার সতেজ একটা পরিবেশ চারিদিকে। গজনী বেশ বড় এরিয়া নিয়ে বিস্তৃত। পুরোটা ঘুরে দেখতে অনেক সময়ের প্রয়োজন। আমরা স্বল্প সময়ে যতটুকু পেরেছি ঘুরে দেখেছি।
প্রথমেই গেলাম ওয়াচ টাওয়ার। এখান থেকে অদূরেই ভারত সীমান্ত। টাওয়ারটা আরো উঁচু হলে ভালোভাবে দেখা যেত। অবকাশ কেন্দ্রে একটা ঝর্ণা ও পার্কও রয়েছে। তেমন আহামরি কিছু না। মানুষের তৈরি জিনিস থেকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই আমাকে বেশি টানে। যা বুঝলাম শীতকালে ঘুরেই বেশি মজা পাওয়া যাবে।
মধুটিলা ইকো পার্ক
গজনী অবকাশ কেন্দ্রের মতই আরেকটি ইকো পার্ক। এটাও বেশ বড়। লোকমুখে শুনলাম রাতে এখানে হাতি আসে।
এখানে শুধু ওয়াচ টাওয়ারেই উঠলাম, আশেপাশে আর কোথাও গেলাম না। ওয়াচ টাওয়ারে একজন দূরবীন নিয়ে বসে থাকেন। কমদামী দূরবীনে কিছুই দেখা যায় না। আমি দূরবীন দেখেই সেটা বুঝে দেখার আগ্রহ করলাম না। কিন্তু আমার সাথের দুইজন খুব আগ্রহ নিয়ে দেখতে গিয়ে হতাশ হলো। আমি কেনো নেই নাই, বুঝতে পারলো 😜
ওয়াচ টাওয়ার থেকে নেমে দেখলাম দুইটা দোকান আছে। ফুচকা, শসা, পেয়ারা, আচার এগুলো বিক্রি করতেছে। বাকিটা সময় সেখানে বসে কাটিয়ে দিলাম। ফুচকা, আচার খেয়ে বের হলার নকুগাঁও স্থল বন্দর দেখার উদ্দ্যশ্যে।
নাকুগাঁও স্থল বন্দর
শেরপুরে যে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত দিয়ে মানুষ আসা যাওয়া করতে পারে তা জানতে পারি তুষার ভাইয়ের কাছ থেকে। বর্ডারের প্রতি আমার বিশেষ দুর্বলতা থাকায় চলে গেলাম। ছোট একটা সীমান্ত। তেমন কোন কড়াকড়ি নেই। মানুষই নেই। শুধু ভারতের কিছু ট্রাক দুইপাশে দাঁড়িয়ে আছে।
আমরা বিজিবি চেক পোস্টে অনুমতি নিয়ে সীমানা পিলারের কাছে চলে গেলাম। তুষার ভাই বার বার করে বলে দিয়েছিলো। কেউ না থাকলেও অবশ্যই যেন বিজিবির কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে এরপর বর্ডারের কাছে যাই। কিছু সময় ঘুরাঘুরি করে চলে আসি।
তুষার ভাই বেশ আক্ষেপ করে বলতেছিলো, ঢাকা থেকে এতকাছে একটা বর্ডার কিন্তু তেমন জনপ্রিয় না।
পানিহাটা বাজার
স্থল বন্দর ঘুরে পানিহাটা চলে আসলাম। এখানে ঠিক কি দেখতে এসেছি তা জানা ছিলো না। তবে আসার রাস্তাটা অনেক সুন্দর। অবশ্য বাজারের কাছের অংশটুকু ছাড়া, এজায়গাটা কাঁচা রাস্তা।
ছোট্ট একটা বাজার। সাথেই একটা নদী রয়েছে। জঙ্গলের মত দেখে আমি সেদিকে হাঁটা দিলাম। আমার সাথে দুই সঙ্গী; সজীব আর মুশফিকুলও হাঁটা দিলো।
সজীব কিছু সময় পর বিরক্ত হয়ে ফিরে গেলেও মুশফিকুল ছিলো। হাঁটতে হাঁটতে বেশ দারুন একটা জায়গা আবিষ্কার করলাম। বন্ধুদের সাথে বিকেলে আড্ডা দেওয়ার জন্য পারফেক্ট একটা জায়গা।
হোটেল সেহের
তুষার ভাই বলে দিয়েছিলো, স্থল বন্দর থেকে নালিতাবাড়ী মধ্য বাজার তেমন দূরে না আর সেখানকার হোটেল সেহেরের মোগলাইয়ের স্বাদ নাকি অসাধারন। আমিও শুধু মোগলাই খাবার জন্য ৩০-৪০ কিলো রাস্তা বেশি গিয়ে হোটেল সেহের খুঁজে পাই। এইখানে আসা নিয়ে আমার সফরসঙ্গীদের সাথে কিছুটা মন কষাকষিও হয়ে যায়। তবে খাবার খেয়ে মনে হয় এত কষ্ট করে আসাটা বৃথা হয় নাই।
বাড়ি ফেরা
আমরা নালিতাবাড়ীর যেখানে আছি সেখান থেকে ঢাকা যাওয়ার কয়েকটা উপায় আছে।
১।রিজার্ভ করে নিয়ে আসা সিএনজিতে করে শেরপুর শহরে গিয়ে রাতের বাসে উঠা। এতে করে বাকি সময় এদিক ওদিক ঘুরতে হবে আর শেরপুর থেকে তেমন ভালো বাস নেই। এসি বাস যেটা আছে সেটাও রাত ১২ টায়!
২।নালিতাবাড়ী থেকে ঢাকার বাসে করে ঢাকা যাওয়া। কিন্তু এই বাসগুলো লোকাল। সারারাস্তা যাত্রী তুলবে।
৩।নালিতাবাড়ী থেকে ময়মনসিংহ যাওয়া। সেখান থেকে ট্রেনে বা বাসে করে ঢাকা।
আমাদের কাছে তিন নাম্বার অপশনটাই বেশি পছন্দ হলো। নালিতাবাড়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে ময়মনসিংহগামী বাসে উঠে পড়লাম। আমাদের ভাগ্য ভালো ছিলো। দুপুরের প্রথম ট্রিপটা আমরা পেয়ে গিয়েছিলাম। তার আগে কোন বাস ছিলো না। এটা না পেলে আমাদের শেরপুরেই যেতে হত।
ময়মনসিংহ পৌঁছে রেলস্টেশন চলে গেলাম। ঠিক করলাম দাঁড়িয়ে হলেও ট্রেনেই যাবো। গাজীপুরের জ্যাম পার হওয়ার ইচ্ছা আমাদের কারোরই ছিলো না। এবং এই সিদ্ধান্তটা বেস্ট সিদ্ধান্ত ছিলো। কোন রকম জ্যাম ছাড়া। ট্রেনের এদিক ওদিক ঘুরতে ঘুরতে ১০.৩০ টার মধ্যেই ঢাকা চলে আসলাম। আর সমাপ্তি ঘটলো আরো একটি ভ্রমণের।
এবারের ভ্রমণে যা যা দেখেছি,
- জামালপুর
- দেওয়ানগঞ্জ রেলস্টেশন
- সুগার মিল
- বাহাদুরাবাদ ঘাট, যমুনা নদী (নদীর ওইপাড়েই গাইবান্ধা রেল ফেরি ঘাট)
- ইসলামপুর বাজার
- শাহ জামালের মাজার
- দয়াময়ী মন্দির
- শেরপুর
- গজনী অবকাশ কেন্দ্র
- মধুটিলা ইকো পার্ক
- নাকুগাঁও স্থলবন্দর
- পানিহাটা বাজার
- পানিহাটা পাহাড়
- নালিতাবাড়ী মধ্য বাজার
যাতায়াত
- কমলাপুর থেকে তিস্তা ট্রেনে দেওয়ানগঞ্জ ৩৪৭ টাকা (ব্ল্যাকে কিনছি, এমনিতে ১৯০ টাকা করে জামালপুর)
- দেওয়ানগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে অটোতে সুগার মিলস ৫ টাকা
- সুগার মিল থেকে অটোতে বাহাদুরাবাদ ঘাট যমুনা নদীর পাড় ১০ টাকা
- বাহাদুরাবাদ থেকে অটোতে ইসলামপুর বাজার ২৫ টাকা
- ইসলামপুর বাজার থেকে হেঁটে মধুর হোটেল
- মধুর হোটেল থেকে হেঁটে তৃপ্তি পানের দোকান
- তৃপ্তি পানের দোকান থেকে হেঁটে জামালপুর যাওয়ার সিএনজি স্টেশন
- সিএনজি স্টেশন থেকে সিএনজিতে শাহ জামাল মাজার ৬০ টাকা
- শাহ জামাল মাজার থেকে অটোতে দয়াময়ী মন্দির ৫ টাকা
- দয়াময়ী মন্দির থেকে অটোতে ব্রিজ পাড় ৫ টাকা
- ব্রিজ থেকে সিএনজিতে শেরপুর শহর, থানার মোড় ৩৫ টাকা
- থানার মোড় থেকে অটোতে খোয়ারপাড় মোড় ৫ টাকা
- খোয়ারপাড় মোড় থেকে রিজার্ভ সিএনজিতে গজনী অবকাশ কেন্দ্র
- গজনী থেকে রিজার্ভ সিএনজিতে মধুটিলা ইকো পার্ক
- মধুটিলা থেকে রিজার্ভ সিএনজিতে নাকুগাঁও স্থলবন্দর
- নাকুগাঁও স্থলবন্দর থেকে রিজার্ভ সিএনজিতে পানিহাটা বাজার
- পানিহাটা থেকে রিজার্ভ সিএনজিতে নালিতাবাড়ী মধ্যবাজার
- নালিতাবাড়ী মধ্যবাজার থেকে হেঁটে হোটেল শেহের
- হোটেল শেহের থেকে রিজার্ভ সিএনজিতে নালিতাবাড়ী ঢাকা বাস স্টেশন
- রিজার্ভ সিএনজি ভাড়া ১৩০০ টাকা
- নালিতাবাড়ী থেকে বাসে ময়মনসিংহ ব্রিজ বাসস্ট্যান্ড ১০০ টাকা
- ব্রিজ থেকে রিকশায় রেলস্টেশন ৩৫ টাকা
- ময়মনসিংহ থেকে অগ্নিবীণা ট্রেনে বিমান বন্দর রেলস্টেশন ১০০ টাকা (এমনিতে ১২৫ টাকা টিকেট, স্ট্যান্ডিং যাওয়ার টিটিকে ১০০ টাকা দিয়ে দেই)
বাজেট (৩ জন)
যাতায়াতঃ ১১৪৭ টাকা
খাবারঃ ৫৪৬ টাকা
হোটেল ভাড়াঃ ৩৪৭ টাকা
সিএনজি নিয়ে গজনী প্রবেশঃ ৫০ টাকা
ওয়াচ টাওয়ার টিকেটঃ ১০ টাকা
মধুটিলা প্রবেশ টিকেটঃ ২০ টাকা
ওয়াচ টাওয়ার টিকেটঃ ১০ টাকা
টোটাল ট্যুর খরচঃ ৬৬৪৫ টাকা
শেরপুর ভ্রমণে কিছু পরামর্শ
- শেরপুর ঘুরে দেখার জন্য সিএনজি রিজার্ভ করে নেওয়াই ভালো। কারন লোকাল সিএনজি তেমন পাওয়া যায় না। এতে করে অনেক সময় নষ্ট হবে।
- যেখানে যাবেন বা খাবেন আগে দাম জেনে নিবেন।
- বর্ডারে গেলে বিজিবির অনুমতি ছাড়া সীমানা পিলারের কাছে যাবেন না।
- রাতে হোটেলে থাকতে জাতীয় পরিচয়পত্র চাইতে পারে তাই এককপি পরিচয় পত্র সাথে রাখবেন।
পরিশেষে, অসংখ্য ধন্যবাদ Asif Shahneoaz Tushar ভাইকে। যার কারনে ট্যুরে যাওয়ার আগেই পুরো রুট সম্পর্কে পুরো ধারনা পেয়ে গিয়েছিলাম। এছাড়াও বিভিন্ন সময় যেকোন প্রয়োজনে ফোন দিয়ে উনার সাহায্য নিয়েছি।