সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণ গাইড (২০২৪) [খরচ, থাকা, খাওয়া, যাতায়াত সব তথ্য]
সেন্টমার্টিন দ্বীপ – বাংলাদেশের একমাত্র কোরাল বা প্রবাল দ্বীপ যা নারিকেল জিঞ্জিরা নামেও পরিচিত। কক্সবাজারে সুগন্ধা, লাবনী, কলাতলী বিচের বালুময় অস্বচ্ছ পানি দেখে অনেকে নীল পানির খোঁজে এই দ্বীপে ভ্রমণ করতে আসে। কেউবা আসে দেশের সর্ব দক্ষিনের শেষ প্রবালটিতে বসে ছবি তুলতে, সমুদ্রের গর্জন শুনতে। কেউ আসে নদী-সাগর পেরিয়ে দ্বীপটিতে কি রহস্য আছে তার সন্ধান করতে।
দ্বীপ ভ্রমণের বিস্তারিত সব তথ্য আজ আমরা এই পোস্ট থেকে জেনে নিবো।
কমন সব প্রশ্নের উত্তর
নভেম্বের থেকে মার্চ ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। তখন টেকনাফ/কক্সবাজার থেকে জাহাজ চলাচল করে। এছাড়া সারাবছর লোকাল ট্রলারে করে যাওয়া যায়।
টানা বন্ধের দিন এবং শুক্র-শনিবার ছাড়া আগে থেকে বুকিং করার প্রয়োজন নেই। তবে ভালো রিসোর্টগুলোতে থাকার জন্য আগে থেকে বুকিং করে যেতে হবে। পরিবার বা বড় গ্রুপ নিয়ে গেলে অবশ্যই আগে বুকিং করে যাবেন।
কক্সবাজার থেকে কর্ণফুলী জাহাজ জাহাজ যাতায়াত করে। এছাড়া কক্সবাজার থেকে বাসে টেকনাফ এসে এরপর জাহাজে করে যাওয়া যায়।
চট্টগ্রাম থেকে বে-ওয়ান জাহাজে করে সরাসরি সেন্টমার্টিন যাওয়া যায়। এছাড়া বাসে যেতে চাইলে প্রথমে কক্সবাজার বা টেকনাফ সেখান থেকে জাহাজে যেতে হবে।
বাংলাদেশের দক্ষিণের সর্বশেষ ভূখন্ড হচ্ছে ছেঁড়াদ্বীপ। সেন্টমার্টিনের মূল দ্বীপের সাথে জোয়ার-ভাটার সময় ছেঁড়াদ্বীপ বিচ্ছিন্ন ও মিলিত হয়।
টেকনাফ থেকে দ্বীপটির দূরত্ব প্রায় ৪২ কিলোমিটার। ২৫ কিলোমিটার নাফ নদী, ১৭ কিলোমিটার বঙ্গোপসাগর।
কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিনের দূরত্ব ১২০ কিলোমিটার। সমুদ্র পথে ৯৫ কিলোমিটার। জাহাজে করে যেতে সময় লাগে ৪ ঘন্টার মত।
বে-ওয়ান জাহাজে করে সরাসরি সেন্টমার্টিন যেতে ১০ ঘন্টার মত সময় লাগে।
ভ্রমণ প্ল্যান
দিনে দিনে ঘুরে আসা
- টেকনাফ থেকে জাহাজে করে সেন্টমার্টিন নামবেন আনুমানিক ১২.৩০ টার দিকে।
- যেহেতু আপনি বিকালের জাহাজে চলে যাবেন তাই সময় নষ্ট না করে জেটি থেকে নেমে ডান পাশের বিচ ধরে হাঁটা শুরু করুন।
- গোসল করবেন ব্লু মেরিন হোটেলের সামনের বিচে। এইদিকে সমুদ্রে ঢেউ তুলনামূলক বেশি থাকে তাই এখানে গোসল করে মজা।
- গোসল করতে না চাইলে একটা ভ্যান রিজার্ভ নিয়ে নিন।
- ভ্যানে করে পুরো দ্বীপ ঘুরবেন। সেক্ষেত্রে অবশ্যই পশ্চিম বিচে যাবেন।
- হুমায়ূন আহমেদের সমুদ্র বিলাস ঘুরে আসতে পারেন।
মনে রাখবেন,
যাই করেন না কেনো ২টার মধ্যে করতে হবে। এরপর খাওয়া-দাওয়া করে জাহাজে উঠে যাবেন।
জাহাজ ঠিক ৩টার সময় ছেড়ে দেয় তাই দেরি করলে বিপদে পড়বেন। এই ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
বারো আউলিয়া জাহাজ জোয়ারের কারনে ৩ টার আগে বা পরে ছেড়ে যায়। কখন ছাড়বে তা আগে থেকেই জেনে নিবেন।
এক বা অধিক রাত থাকা
টেকনাফ থেকে জাহাজে করে সেন্টমার্টিন। যেহেতু আপনি এক বা একাধিক রাত থাকবেন আপনার তাড়াহুড়ো নেই।
প্রথমে হোটেলে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিন। এরপর গোসল করতে সমুদ্রে নেমে পড়ুন। বিকালে ছেঁড়াদ্বীপ চলে যেতে পারেন তাহলে সূযার্স্ত দেখে আসতে পারবেন। সেক্ষেত্রে চেষ্টা করবেন বিকাল ৪টার মধ্যে রওনা দিতে। রাতে জেটিঘাটে বসে সমুদ্রের গর্জন শুনুন।
পরদিন সকালে খুব ভোরে বের হয়ে পশ্চিম বিচ ধরে হাঁটতে থাকুন। যত দূর যাবেন ততই নানা সৌন্দর্য দেখা দিবে। সাইকেল নিয়েও ঘুরতে পারেন। এরপর দুপুরের খাবার খেয়ে জাহাজে উঠে পড়ুন।
প্রথমদিন ছেঁড়াদ্বীপ যেতে না চাইলে দ্বিতীয় দিন খুব সকালে সূর্যোদয়ের পর পর চলে যাবেন। তাহলে ঘুরে মজা পাবেন। রোদের তেজ বেড়ে গেলে ঘুরে মজা পাওয়া যায় না।
টিপসঃ ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি ভীড় থেকে বাঁচতে জাহাজে ২টা ১০ এর মধ্যে উঠে পড়বেন। নাহলে দীর্ঘ সময় লাইন দিয়ে জাহাজে উঠতে হবে।
সেন্টমার্টিন দ্বীপ যাওয়ার উপায়
টেকনাফ থেকে জাহাজ করে নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত সেন্টমার্টিন যাওয়া যায়। এছাড়া ট্রলারে করে সারাবছরই টেকনাফ থেকে যাওয়া যায়।
তবে বর্তমানে কক্সবাজার থেকে জাহাজ সার্ভিস চালু হওয়ায় সারা বছর সেন্টমার্টিন যাওয়া যাবে।
দ্বীপটিতে যাওয়ার বেশ কয়েকটি উপায় রয়েছে। কেউ শুধু সেন্টমার্টিন যায়, কেউ সেন্টমার্টিন-কক্সবাজার দুই জায়গাতে ঘুরতে যায়। সবগুলো উপায়ই বলছি।
ঢাকা বা দেশের যেকোন জেলা থেকে
ঢাকা বা দেশের যেকোন স্থান থেকে প্রথমে টেকনাফ। টেকনাফ থেকে সকালের জাহাজে করে সেন্টমার্টিন। যতদিন ইচ্ছা থেকে অথবা দিনে দিনে ঘুরে বিকালের জাহাজে করে টেকনাফ। টেকনাফ থেকে বাসে করে পরবর্তী গন্তব্যস্থল।
ঢাকা বা দেশের যেকোন জেলা থেকে সেন্টমার্টিন ঘুরে কক্সবাজার
ঢাকা বা দেশের যেকোন স্থান থেকে প্রথমে টেকনাফ। টেকনাফ থেকে সকালের জাহাজে করে সেন্টমার্টিন। যতদিন ইচ্ছা থেকে আবার বিকালের জাহাজে করে টেকনাফ। টেকনাফ থেকে বাস/রিজার্ভ মাইক্রোতে করে কক্সবাজার। কক্সবাজার যতদিন ইচ্ছা থেকে পরবর্তী গন্তব্যস্থল।
ঢাকা বা দেশের যেকোন জেলা থেকে কক্সবাজার ঘুরে সেন্টমার্টিন
ঢাকা বা দেশের যেকোন স্থান থেকে প্রথমে কক্সবাজার। কক্সবাজার যতদিন ইচ্ছা থেকে খুব ভোরে টেকনাফের বাস, রিজার্ভ মাইক্রো/জীপে করে টেকনাফ। টেকনাফ থেকে সকালের জাহাজে করে সেন্টমার্টিন। যতদিন ইচ্ছা থেকে আবার বিকালের জাহাজে চড়ে টেকনাফ। টেকনাফ থেকে বাসে করে পরবর্তী গন্তব্যস্থল।
কক্সবাজার থেকে সরাসরি জাহাজে সেন্টমার্টিন
কক্সবাজার থেকে বর্তমানে সরাসরি সেন্টমার্টিনের শীপ চালু রয়েছে। তাই টেকনাফ হয়ে জাহাজ না উঠে সরাসরি কক্সবাজার থেকে জাহাজে উঠতে পারবেন। বর্তমানে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস জাহাজ নিয়মিত উত্তর নুনিয়াছটা বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে জোয়ার-ভাটার উপর নির্ভর করে ভোর ৫টা থেকে সকাল ১০টার মধ্যে ছেড়ে যায়।
চট্টগ্রাম থেকে সেন্টমার্টিন
চট্টগ্রামের সিনেমা প্যালেস, দামপাড়া থেকে কিছু বাস রাত ১২/১ টায় চট্টগ্রাম থেকে টেকনাফের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
এছাড়া এখন বে-ওয়ান জাহাজে করে সরাসরি চট্রগাম থেকে জাহাজে করে সেন্টমার্টিন যাওয়া যায়।
পরিবহন ব্যবস্থা
বাস
ঢাকা টু টেকনাফ বিভিন্ন এসি এবং নন-এসি বাস চলাচল করে। এদের মধ্যে রয়েছে,
হানিফ, শ্যামলী, সেন্টমার্টিন পরিবহন, সেন্টমার্টিন ট্রাভলস, গ্রীন সেন্টমার্টিন, রিলাক্স, রয়েল কোচ, হেরিটেজ, গ্রীন লাইন সহ আরো বিভিন্ন ব্যানারের বাস।
টেকনাফ বাস ভাড়া
- নন-এসিঃ ১২০০-১৩০০ টাকা
- এসিঃ ১৪০০-২২০০ টাকা
জাহাজ ভাড়া (আসা-যাওয়া)
জাহাজের ভাড়া এবং টিকেট বুকিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সেন্টমার্টিন জাহাজ ভাড়া ও বুকিং পোস্টটি পড়ুন।
জাহাজের নাম | নিচতলা | দোতলা | বিজনেস ক্লাস |
---|---|---|---|
কর্ণফুলী এক্সপ্রেস | ১৫০০-১৫,০০০ টাকা | ||
এমভি বার আউলিয়া | ১৪০০-১০,০০০ টাকা | ||
কেয়ারী সিন্দবাদ | ১০০০ টাকা | ১৩০০ টাকা | ১৪০০ টাকা |
কেয়ারী ক্রুজ এন্ড ডাইন | ১২০০ টাকা | ১৪০০ টাকা | ১৬০০ টাকা |
আটলান্টিক ক্রুজ | ১৪০০ টাকা | ১৫০০ টাকা | ১৭০০-২১০০ টাকা |
এল সিটি কাজল | ১২০০ টাকা | ১৪০০ টাকা | ১৬০০-৫০০০ টাকা |
ভাষা শহীদ সালাম | ১০০০ টাকা | ১৩০০ টাকা | |
এম ভি অপরাজিতা | ১২০০ টাকা | ১৪০০ টাকা | ১৫০০ (কেবিন, ১ জন) |
এস টি সুকান্ত বাবু | ৯০০ টাকা | ১০০০ টাকা | ২৫০০ (কেবিন, ২ জন) |
গ্রীন লাইন | ১৮০০ টাকা | ২২০০ টাকা | |
বে ক্রুজার | ১৩০০ টাকা | ১৪০০ টাকা | ১৬০০ টাকা |
বে-ওয়ান | ৫০০০-৫০,০০০ টাকা | – | – |
জাহাজের টিকেটের জন্য ক্লিক করুন ওয়াটসএপ বাটনে
টেকনাফের জাহাজ সম্পর্কিত তথ্য
- আমার ব্যক্তিগত পছন্দ কেয়ারী সিন্দাবাদ, এমভি ফারহানের ওপেন ডেক।
- কেয়ারী ক্রুজ এন্ড ডাইন, বে ক্রুজ, গ্রীন লাইন এসি জাহাজ।
- বারো আউলিয়ায় এসি, নন-এসি সব আছে।
- ছুটি বা অতিরিক্ত ভীড়ের দিন ব্যতীত জাহাজের টিকেট ঘাটে গিয়েই নিতে পারবেন। ভীড়ের দিনে আগে থেকে টিকেট করে রাখতে হবে। নাহলে ঘাটে গিয়ে টিকেট নাও পেতে পারেন।
- পরিবার না থাকলে জাহাজের স্ট্যান্ডিং টিকেটে সমস্যা হয় না। ২.৩০ ঘন্টার জার্নি নদী, সমুদ্র দেখতে দেখতে কেটে যায়। তবে পরিবার থাকলে অবশ্যই সিট আছে এমন টিকেট কাটবেন।
- কেয়ারী সিন্দাবাদ ও এমভি ফারহান সিট নাম – মেইন ডেক, ওপেন ডেক, বিজনেস ডেক।
- কেয়ারী ক্রুজ এন্ড ডাইন সিট নাম – কোরাল লাউঞ্জ(নিচতলা), এক্সক্লুসিভ লাউঞ্জ, পার্ল লাউঞ্জ।
- বে ক্রুজ সিট নাম – রজনীগন্ধা, হাসনাহেনা, কৃষ্ণচূড়া।
- দ্যা আটলান্টিক ক্রুজ সিট নাম – ইকোনমি ডেক, ওপেন ডেক, রয়েল লাউঞ্জ, লাক্সারি লাউঞ্জ।
- বারো আউলিয়া জাহাজের সিট নাম – সানডেক, মোজারাত লাউঞ্জ, ফ্যামিলি বাঙ্কার কেবিন, মেইন ডেক, প্যানেরোমা, রিভেরা।
- বে ক্রুজার জাহাজের সিট নাম – রজনীগন্ধা, হাসনাহেনা, কৃষ্ণচূড়া
কক্সবাজারের জাহাজ সম্পর্কিত তথ্য
- এম ভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ক্রুজ শিপ কক্সবাজারের উত্তর নুনিয়াছটা বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে ছেড়ে যায়।
- কক্সবাজারে হোটেল-মোটেল জোন ইনানীর দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার। অটোতে ৪০-৫০ মিনিট সময় লাগে।
- সময় সুচী:
- কক্সবাজার থেকে জোয়ার-ভাটার উপর নির্ভর করে ভোর ৫টা থেকে সকাল ১০টার মধ্যে ছাড়ে
- সেন্টমার্টিন থেকে ছাড়ে দুপুর ২টা – ৫টার মধ্যে ছাড়ে।
- উভয় দিক থেকে গন্তব্যে পৌঁছাতে সময় লাগে আনুমানিক ৪ ঘন্টা (+/-)
- সেন্টমার্টিন পৌঁছে জাহাজ জেটি ঘাট পর্যন্ত যেতে পারে না। ট্রলার দিয়ে জাহাজ থেকে মূল জেটি ঘাটে যাত্রী নেওয়া হয়।
- সেন্টমার্টিন থেকে কক্সবাজার যাওয়ার সময় বিকালে মূল জেটি ঘাট থেকেই জাহাজে উঠা যায়।
- সিঙ্গেল কেবিন ব্যতীত, প্রতিটি টুইন বেড, ভি আই পি ও ভি আই পি কেবিন দুই (২) জন এর জন্য প্রযোজ্য। অতিরিক্ত জনপ্রতি আলাদা টিকেট কেটে নিতে হবে।
- ছোট বাচ্চা ৫ বছরের নিচে ফ্রি।
- আপনার ফেরার (রিটার্ন) তারিখ টিকেট করার সময় উল্লেখ করতে হবে। নাহলে সিট পাবেন না।
- সমুদ্র যাত্রা পথে ছোট বাচ্চাদের সব সময় সাবধানে ও কাছে রাখুন।
- নাস্তার খালি প্যাকেট, চিপস / জুস এর খালি প্যাকেট, কফি/ চা এর ওয়ান টাইপ কাপ সহ সকল ময়লা আবর্জনা পানিতে ও জাহাজের যেখানে সেখানে না ফেলে ডাস্টবিনে ফেলুন। প্রতিটি ফ্লোরেই পর্যাপ্ত ডাস্টবিন দেয়া আছে।
জাহাজের টিকেটের জন্য ক্লিক করুন ওয়াটসএপ বাটনে
চট্টগ্রামের জাহাজ সম্পর্কিত তথ্য
- এম ভি বে ওয়ান চট্টগ্রাম পতেঙ্গার ১৫ নম্বর ঘাট, পতেঙ্গা এয়ারপোর্ট নিকট থেকে ছাড়ে।
- জাহাজটি চট্টগ্রাম থেকে রাত ১০ টায় সেন্টমার্টিন যাত্রা করবে। সেন্টমার্টিন পৌঁছাবে পরদিন সকাল ৭/৮ টায়।
- সেন্টমার্টিন থেকে সকাল ৯টায় জাহাজ ছাড়ে। চট্টগ্রাম পৌঁছাবে একই দিন রাত ৭/৮ টায়।
- পরিবারের সাথে ৫ বছরের কম বয়সী শিশু ফ্রি থাকতে পারবে।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ কর্ণফুলী এবং বে-ওয়ান জাহাজের বিভিন্ন তথ্য তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া হয়েছে। ভ্রমণের পূর্বে অবশ্যই আপটুডেট তথ্য জেনে যাবেন।
হোটেল ও রিসোর্ট
সেন্টমার্টিন জেটি ঘাটের সাথে বাজারে অনেক হোটেল আছে। দামাদামি করে সেখান থাকতে পারেন। ছুটির দিন, অতিরিক্ত ভীড়ের দিন গেলে অবশ্যই আগে বুকিং দিয়ে যাবেন।
নিরিবিলিতে থাকতে চাইলে পশ্চিম বিচের দিকে চলে যেতে হবে। সেখানে বেশ কিছু বিচ ভিউ রিসোর্ট আছে। সমুদ্রের পানি রিসোর্টের উঠানে এসে বাড়ি খায়। হোটেল ভাড়া সময়ভেদে ২০০০-২৫০০০ পর্যন্ত।
রিসোর্ট বুকিং এর জন্য ক্লিক করুন ওয়াটসএপ বাটনে
পশ্চিম বিচের কিছু রিসোর্ট
- দ্বীপান্তর বিচ রিসোর্ট (Dwipantor Beach Resort)
- আটলান্টিক রিসোর্ট (পূর্ব নাম-লাবিবা বিলাস) (Atlantic Resort)
- জ্যোৎস্নালয় বিচ রিসোর্ট (Josnaloy Beach Resort)
- ব্লু মেরিন রিসোর্ট (Blue Marine Resort)
- ফ্যান্টাসি হোটেল এন্ড রিসোর্ট (Fantasy Hotel and Resort)
- কিংশুক ইকো রিসোর্ট (Kingshuk Resort)
- মিউজিক ইকো রিসোর্ট (Music Eco Resort)
- নীল দিগন্ত রিসোর্ট (Nil Digante Resort)
- দ্যা বিচ ক্যাম্প রিসোর্ট (The Beach Camp Resort)
সেন্টমার্টিনের রিসোর্ট সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে সেন্টমার্টিনের সেরা রিসোর্ট পোস্টটি পড়ুন।
রিসোর্ট বুকিং এর জন্য ক্লিক করুন ওয়াটসএপ বাটনে
কি খাবেন
- ডাব
- মাছের বারবিকিউ (বাজারে সব হোটেলেই মাছ সাজিয়ে রাখা হয় যেটা বলবেন বারবিকিউ করে দিবে)
- জেটি থেকে বাজারের রাস্তা ধরে শেষ মাথায় হাতের বামে পেয়াজু,সিঙ্গারা, সমুচার দোকান আছে। ওদের পেয়াজু। সন্ধ্যা ৭.৩০ মধ্যেই শেষ হয়ে যায় তাই আগে আগে যাবেন।
- চিংড়ি, ক্র্যাব ফ্রাই
খাবার খরচ
- সকালের নাস্তা – ১০০-২৫০ টাকা
- দুপুরের খাবার প্যাকেজ – ২৫০-৪০০ টাকা
- রাতের বারবিকিউ প্যাকেজ – ৩৫০-৭০০ টাকা
খাবার সংক্রান্ত পরামর্শ
- খাবার পূর্বে দাম জেনে নিবেন
- জেটি ঘাটের কাছে অনেক হোটেল আছে। সেখানে লাইভ ফিশ কিনে বারবিকিউ খেতে পারেন। মাছ কেনার সময় দামাদামি করে কিনবেন।
- পশ্চিম বিচের রিসোর্টে থাকলে রিসোর্টের হোটেলে খাবার খেতে হবে। নাহলে প্রতিবার খাবার জন্য জেটিঘাটের কাছে আসতে হবে। রিসোর্টের হোটেলের খাবার খেতে ভালো হয় তাই চিন্তার কোন কারন নেই। আর দামও তুলনমূলকভাবে বেশি না।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের দর্শনীয় স্থান
পুরো সেন্টমার্টিন-ই অপূর্ব সুন্দর। অফুরন্ত প্রাণের ভান্ডার এই দ্বীপের যা দেখবেন তাই ভালো লাগবে। তবু বিশেষভাবে দর্শনীয় কি কি আছে তার একটি তালিকা করে দিচ্ছি।
- দ্বীপের উত্তর পাশের নারিকেল জিঞ্জিরা (জেটি থেকে বাম পাশের বিচ ধরে হাঁটলেই পাবেন)
- পশ্চিম পাশের কোরাল দ্বীপ
- জেটি ঘাট (সকালে সমুদ্রের পানির রঙ দেখে অবাক হয়ে যাবেন। আর রাতে জেটির সিঁড়িতে বসে সমুদ্রের গর্জন শুনে)
- গলাচিপা (দ্বীপের সবচেয়ে সরু অংশ)
- ছেঁড়াদ্বীপ (বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিনের শেষ স্থলভাগ)
- পশ্চিম বিচে বসে সূর্যাস্ত
- জেটিঘাটে বসে সূর্যোদয়
- রাতের পরিষ্কার আকাশে লক্ষ লক্ষ তারা অথবা ভরা পূর্ণিমা
- বিকালে জেটির বাম পাশের বিচে জেলেদের সাথে জাল টেনে মাছ ধরা
- বাজার থেকে পাকা রাস্তা ধরে হেঁটে অবকাশ হোটেল পর্যন্ত স্থানীয়দের বাসস্থান, জীবন ধারা
- সন্ধ্যা/রাতে বাজার
সেন্টমার্টিনে যা যা করা যায়
- সাইকেল চালানো
- হেঁটে/স্পিডবোট/মাছ ধরার ট্রলার/লাইফবোটে ছেঁড়াদ্বীপ যাওয়া
- নানা ধরনের মাছের বার-বি-কিউ খাওয়া
- খুব ভোরে উঠে জেলেদের কাছ থেকে মাছ কেনা
- বিকেলে জেলেদের সাথে জাল টেনে মাছ ধরা (ভাগ্য ভালো হলে ফ্রি মাছও পেয়ে যেতে পারেন)
- ক্যাম্প ফায়ার
- স্কুবা ড্রাইভিং করা
ছেঁড়াদ্বীপ
ছেড়াদ্বীপের অপর নাম ছেঁড়াদিয়া বা সিরাদিয়া।
বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে ছেঁড়াদ্বীপের অবস্থান। সেন্টমার্টিন থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দক্ষিনে এই দ্বীপ অবস্থিত। এর পর বাংলাদেশের আর কোন ভূখন্ড নেই।
১০০ থেকে ৫০০ বর্গমিটার আয়তনবিশিষ্ট কয়েকটি দ্বীপ নিয়ে ছেড়াদ্বীপ গঠিত। জোয়ার ভাটার সময় সেন্টমার্টিনের মূল ভূখন্ড থেকে এই দ্বীপপুঞ্জ বিচ্ছিন্ন বা আলাদা হয়ে যায় বলেই এর নাম ছেঁড়াদ্বীপ।
সেন্টমার্টিন থেকে পায়ে হেঁটে ছেঁড়াদ্বীপ যাওয়া হয়েছিলো। ভিডিওটি সংযুক্ত করে দিলাম। সময় থাকলে দেখে নিতে পারেন। অপরূপ কিছু দৃশ্য দেখতে পারবেন কথা দিচ্ছি।
ছেঁড়াদ্বীপ যাওয়ার উপায়
- ভাটার সময় হেঁটে/সাইকেলে।
- জেটি ঘাট থেকে প্যাকেজে। যেতে ৩০ মিনিট, আসতে ৩০ মিনিট আর ঘোরার সময় ১ ঘন্টা।
- মাছ ধরার ট্রলার রিজার্ভ করে।
- অটো রিজার্ভ নিয়ে ছেঁড়াদ্বীপ যাওয়া যায়।
পায়ে হেঁটে ছেঁড়াদ্বীপ
- হেঁটে যেতে দেড়-দুই ঘন্টা লাগে যদি পশ্চিম বিচ ধরে যান। আমি এটাই সাজেস্ট করবো। এপাশ দিয়ে যাওয়াটা একটু কষ্টকর কিন্তু যাওয়াটা বৃথা হবে না।
- আরামে এবং দ্রুত যেতে চাইলে পূর্ব বিচ ধরে যাবেন।
- জোয়ারের সময় পরিবর্তন হয়। তাই যেদিন যাবেন স্থানীয় লোক বা রিসোর্টের ম্যানেজারের জাছে জিজ্ঞাসা করে নিবেন।
- আসার সময় ট্রলার পাওয়া যাবে না। সবাই রিজার্ভ ট্রলার নিয়ে যায়। যদি কাউকে অনুরোধ করে উঠতে পারেন তাহলে হয়তো পেতে পারেন।
- হেঁটে যেতে, পশ্চিম বিচ দিয়ে যাবেন এবং পূর্ব বিচ দিয়ে আসবেন তাহলে ভালো মত দেখতে পারবেন।
ভ্রমণ প্যাকেজ
সেন্টমার্টিন ট্যুর প্যাকেজের জন্য এই পোস্টটি পড়ুন
সেন্টমার্টিন ভ্রমণ খরচ
ভ্রমণে কত খরচ হবে তা নির্ভর করবে আপনি কিভাবে যাবেন, কি খাবেন, কোথায় থাকবেন, কি কি করবেন এরকম বিভিন্ন বিষয়ের উপর।
এছাড়াও বছরের কোন সময় যাচ্ছেন তার উপরও খরচ নির্ভর করে। যেমন ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি হচ্ছে পিক সিজন। এসময় খরচ তুলনামূলক বেশি হবে। তাছাড়া একটানা লম্বা ছুটির দিনগুলোতেও খরচ বেশি হয়।
যাতায়াত খরচ (কক্সবাজার হয়ে)
বাস ভাড়াঃ নন এসি বাসে আসা-যাওয়া ২৪০০ টাকা। এসি বাসে ২৮০০-৪৪০০ টাকা।
জাহাজ ভাড়াঃ ইকোনমি ক্লাসে ২৪০০ টাকা, বিজনেস ক্লাসে ৩০০০ টাকা।
ছেড়াঁ দ্বীপঃ আসা-যাওয়া ২০০-৩০০ টাকা
লোকাল যাতায়াতঃ ১৫০-২০০ টাকা
অন্যান্য খরচঃ ২০০ টাকা
হোটেল খরচ
হোটেলের মান ভেদে ২০০০-২৫০০০ টাকা। বাজারের আশেপাশে বা বিচ থেকে দূরে ভিতরের দিকে স্ট্যান্ডার্ড মানের হোটেল ভাড়া ১৫০০-২৫০০ টাকা।
খাবার খরচ
যাত্রার দিন এবং ফেরার দিন বিরতিতেঃ ৪০০-৬০০ টাকা (কি খাবের তার উপর নির্ভরশীল)
১ম দিনঃ নাস্তা ১০০-১৫০ টাকা। দুপুরের খাবার ২০০-৩০০ টাকা। রাতে বার-বি-কিউ ২৫০-৪০০ টাকা।
২য় দিনঃ নাস্তা ১০০-১৫০ টাকা। দুপুরের খাবার ২০০-৩০০ টাকা।
সব মিলিয়ে মোটামোটি মানের হোটেলে থাকা, নন এসি বাসে যাওয়া আসা এবং জাহাজে ইকোনমি সিটে গেলে ১ রাত সেন্টমার্টিন থাকলে খরচ হবে ৭৫০০ টাকা।
সতর্কতা
- টেকনাফ জাহাজ ৯-১০ টার মধ্যে সব জাহাজ ছেড়ে যায়। তাই জাহাজ মিস করলে ঐদিন আর জাহাজ পাবেন না।
- টেকনাফে জাহাজ মিস করলে ট্রলারে যেতে পারেন। ঘাটের লোকজনকে জিজ্ঞাসা করলেই তারা ট্রলার ঘাট কোথায় দেখিয়ে দিবে।
- সেন্টমার্টিনে জাহাজ মিস করলে ঐদিন জাহাজ বা ট্রলার কিছুই পাবেন না। সেক্ষেত্রে স্পিডবোটে টেকনাফ যেতে হবে অথবা দ্বীপে থাকতে হবে।
সেন্টমার্টিন যাওয়ার আগে যা অবশ্যই জানা দরকার
- হোটেল বা রিসোর্ট বুকিং করার সময় এর অবস্থান সম্পর্কে জেনে নিবেন। যেমন পশ্চিম বিচে নাকি পূর্ব বিচে। বিচ থেকে রিসোর্টের দূরত্ব কতটুকু? কিছু রিসোর্ট রয়েছে যেগুলোতে জোয়ারের সময় পানি রিসোর্টের গেট পর্যন্ত চলে আসে। জোয়ারের সময় ভীষন ভালো লাগে।
- সেন্টমার্টিন জেটি ঘাটে নেমেই রিকশা/অটো না নিয়ে কিছুটা হেঁটে বাজার পর্যন্ত চলে যাবেন। তাহলে ভাড়া অনেক কম পড়বে।
- পানিতে নামার সময় অবশ্যই কোরাল থেকে সাবধান থাকবেন। ধারালো কোরালে সহজেই পা কেটে যেতে পারে। পানিতে বেশিদূর না যাওয়াই উত্তম।
- যেকোন রেস্টুরেন্টে খাবার পূর্বে দাম জেনে নিবেন। বিচের পাড়ের দোকান থেকে মাছের বারবিকিউ খাওয়ার সময় আগেই দরদাম করে নিবেন।
- সেন্টমার্টিনে দিন-রাত ২৪ ঘন্টাই ঘুরে বেড়াতে পারবেন। তবে রাতে কুকুরের পাল থেকে সাবধান। একা বা দোকলা থাকলে ভয় পেতে পারেন। কাপল হলে বেশি নির্জন কোথাও না যাওয়াই ভালো। দ্বীপের মানুষ ভালো হলেও সারাদেশ থেকে পর্যটক যাওয়ায় বিভিন্ন মানসিকতার মানুষ থাকে।
- হেঁটে বা সাইকেলে গেলে স্থানীয়/রিসোর্ট থেকে জেনে যাবেন ভাটার সময় কখন।
- পশ্চিম বিচ থেকে বিকালে ট্রলার রিজার্ভ করে গেলে আসার সময় সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে আসতে পারবেন।
- চেষ্টা করবেন ২টার মধ্যে ছেঁড়াদ্বীপের উদ্দ্যেশ্য ট্রলারে রওণা দিতে তাহলে বেশি সময় কাটাতে পারবেন।
- প্যাকেজ ট্রলারে করে গেলে সময়ের দিকে লক্ষ্য রাখবেন।
- ছেঁড়াদ্বীপ যাওয়া সবচেয়ে ভালো হয় যদি ভোরবেলা সূর্য উঠার পর পর যেতে পারেন। সূর্যের তেজ বাড়ার আগে আগে ঘুরে চলে আসতে পারবেন। তখন মানুষও কম থাকে।
বিশেষ অনুরোধ
- প্রবাল নিয়ে আসবেন না। ১ জন মানুষ ১টা করে প্রবাল আনলেও ১ লাখ মানুষ ১ লাখ প্রবাল নিয়ে আসবে। সিজনে কয়েক লাখ মানুষ সেন্টমার্টিনে যায়!
- যেখানে সেখানে ময়লা ফেলবেন না। দ্বীপটি আমাদের। ময়লা ফেলে এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট করবেন না।
- স্থানীয়দের সাথে খারাপ ব্যবহার করবেন না।
সেন্টমার্টিন দ্বীপ নিয়ে আমার কিছু অভিজ্ঞতা
২০১০-২০২২ দীর্ঘ ১২ বছরে অনেকবার দ্বীপটিতে যাওয়া হয়েছে।
কখনো ১ রাত, কখনো ২ রাত থেকেছি। কিন্তু এখনো মনের তৃপ্তি মিটে নি।
অফুরন্ত প্রাণের ভান্ডার এই দারুচিনি দ্বীপ।
দ্বীপের আয়তন ১০-১৫ বর্গকিলোমিটার। হেঁটে পুরো দ্বীপ ঘুরতে চাইলে হাঁটতে হবে প্রায় ১১/১২ কিলোমিটার। পুরো দ্বীপটি হেঁটে না ঘুরলে প্রকৃত অর্থে সেন্টমার্টিনের আসল সৌন্দর্যই দেখা সম্ভব হয় না।
দ্বীপের উত্তর পাশে নারিকেল জিঞ্জিরা। মাঝে দ্বীপের সবচেয়ে সরু স্থান গলাচিপ যেখানে পূর্ব এবং পশ্চিম দুই পাশের সমুদ্রের গর্জন শোনা যায়। এবং সর্ব দক্ষিনে ছেড়াদিয়া বা ছেঁড়াদ্বীপ।
জেটি থেকে নেমে হাতের বামে বিচ ধরে হেঁটে গেলে দেখা যাবে সমুদ্রের এক ধরনের রূপ। এপাশ দিয়ে ভাটার সময় হাঁটতে থাকলে ছেড়াদ্বীপ যাওয়া যায়। সাগর তুলনামূলক শান্ত পূর্বপাশের এদিকটাতে।
জেটির ডান পাশের বিচে মূলত সবাই গোসল করতে নামে। বাজারের আশেপাশের রিসোর্টে যারা থাকে তারাও এই বিচের আশেপাশে ঘোরাঘুরি করে। এই বিচ ধরে পশ্চিম দিকে যেতে থাকলে কেন দ্বীপের নাম ‘নারিকেল জিঞ্জিরা’ তার সত্যতা মিলবে।
কোরাল দ্বীপ নামের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য যেতে হবে পশ্চিম বিচে। ভাটার সময় পশ্চিম বিচ ধরে যত ছেঁড়াদ্বীপের দিকে হাঁটা যায় তত বাহারী কোরালের দেখা মিলবে। বিশালাকার, ক্ষুদ্রাকৃতি, অদ্ভুতাকার কি নেই এখানে।
গলাচিপা দ্বীপের সবচেয়ে সরু অংশ। পূর্ব বা পশ্চিম যেদিকের বিচ ধরেই যান গলাচিপায় আসলে আপনি অবাক হতে বাধ্য। কেন তা নিজে ভ্রমণ করেই আবিষ্কার করুন!
ছেঁড়াদ্বীপ হেঁটে বা সাইকেলে গেলে যে অংশটা জোয়ারের সময় ডুবে যায় তার ঠিক আগে আগে ম্যানগ্রোভ বনের দেখা মিলবে যেন। দ্বীপের কি রূপ দেখলেন আর এখানে এসে কি দেখতেছেন! নিজের চোখকে বিশ্বাস হতে চাইবে না।
ছেঁড়াদ্বীপ অংশটুকু আরেক বিস্ময়। এখানের প্রবালগুলোকে আমার কাছে বেশি প্রানবন্ত মনে হয়। ছেঁড়াদ্বীপের পশ্চিম পাশের বিচ দেখা পাবেন প্রাকৃতিক একুরিয়ামের। অদ্ভুত এক গাছ রয়েছে কেওড়ার বনে। খুঁজে দেখবেন অবশ্যই। দিনের বেলাতেও গাঁ গাঁ ছম ছম অনুভূতি হয় সেখানে।
ছেঁড়াদ্বীপের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে, শেষ মাথায় বসে সমুদ্রের ঢেঊ দেখতে দেখতে ঢেঊয়ের গর্জন শুনতে। মূল দ্বীপ থেকে যা সম্পূর্ণ আলাদা। অন্তত আমার কাছে তাই মনে হয়। যারা ছবি তুলতে পছন্দ করেন তাদের জন্যও ছেঁড়াদ্বীপ স্বর্গ।
সেন্টমার্টিন দ্বীপ ম্যাপ