হুট করে দপদপিয়া ফেরী ঘাট (ভিডিওসহ)

উদ্দেশ্যহীনভাবে বাসা থেকে বের হলাম। জিলা স্কুল মোড়ে রুপাতলীর লোকাল অটো দাঁড়িয়ে আছে। চড়ে বসলাম।

রুপাতলী নামতেই শুনি, এই ফেরীঘাট! ফেরীঘাট! ফেরীঘাট মানে নদী। আমার তো নদীই দরকার।

দপদপিয়া টোল প্লাজাকে বামে রেখে অটো সোজা এগিয়ে চললো। নামিয়ে দিলো, দপদপিয়া ফেরীঘাটে!

আসর ওয়াক্ত চলছে। সূর্যের তেজ নেই, তবু ঘাম হচ্ছে। থেমে থেমে বাতাস ভেসে আসছে। সে বাতাসে আরাম লাগছে।

ছোট্ট ফেরীঘাট। ঘাটে গোটে পাঁচেক টিনের দোকান। মুড়ি পেঁয়াজুর দোকান, মুদির দোকান আর সেলুন। দোতলা পাকা মসজিদের ছাদ টিনের। ভিতরে টাইলস করা।

থমথমে ঘাটে করার কিছু নেই। মুড়ি বানাতে বলে নদী দেখছি। হুট করে এক ট্রলার এসে হাজির। এখানে ফেরী থামে না। ট্রলার এপাড়-ওপাড় করে। ১০ টাকা ভাড়া।

আরাম করে মুড়ি খাওয়া হলো না। পার্সেল নিয়ে ট্রলারে চেপে বসলাম। দূরে দপদপিয়া ব্রিজ দেখা গেলো। ব্রিজের উপর দিয়ে বেশ কয়েকবার গেলেও, আজ প্রথম নিচ দিয়ে নদী পার হলাম।

দপদপিয়া পুরাতন ফেরীঘাট। সড়ক বিভাগ, ঝালকাঠি। কীর্তনখোলা নদী বরিশাল ও ঝালকাঠি দুইজেলার মাঝ দিয়ে বয়ে চলছে।

এপাড়ের ঘাট বেশ জমজমাট। অনেক ধরনের দোকান। ফলের দোকান, খাবার হোটেল, মুদি দোকান সবই আছে।

এক দোকানে গরম গরম পুরি দেখে ঢুকলাম। ডালপুরি। বেশ মজার। ৫ টাকা পিস। সাদা রসগোল্লা খেলাম। ১০ টাকা পিস।

ট্রলার ঘাটের পাশে দারুন এক জায়গা পেলাম। বলগেট আনলোড হচ্ছে। এখান থেকে উত্তাল নদী, দূরে দপদপিয়া ব্রিজ, অস্তমিত সূর্যের দেখা মিলে। একটা বিকাল উপভোগ করতে যা লাগে, তার সবটাই এখানে আছে।

আমি ক্ষণিকের পথিক, কিছু সময় দাঁড়িয়ে, আনন্দময় স্মৃতি জমিয়ে পা বাড়ালাম।

ঘাট থেকে দূরে রাস্তা দেখে যায়। দুই পাশ থেকে গাছ এসে ঢেকে রেখেছে। লোভ লাগলো। আরো কাছ থেকে দেখতে হবে। চারভাবে সেখানে যাওয়া যায়। অটোতে, রিকশায়, ভ্যানে আর পায়ে হেঁটে। গরমে পায়ে হেঁটে যে আনন্দ পেতে চাই তা হবে না। অটো আর রিকশাও বাদ। চড়ে বসলাম ভ্যানে।

ভ্যান জিরো পয়েন্ট নামিয়ে দিলো। রাস্তার পাশে এক মাছ বিক্রেতা ইলিশের ঢালি সাজিয়েছে। ১২০০-১৩০০ গ্রাম সাইজের ইলিশ ২৫০০ টাকা কেজি। ঢাকায় ইলিশ মনে করে সার্ডিন মাছ কেনার স্মৃতি মনে পড়ে গেলো।

সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। ফিরতি পথ ধরতে হবে। আবারব ট্রলারে চেপে বসলাম। আমি সাধারনত যে পথে আসি, সে পথে ফিরি না। তবে আজ তার ব্যতিক্রম হলো। নদীর মায়ায় একই পথ ধরলাম…

পুরো গল্পটা ভিডিওতে দেখতে পারেন।

শেয়ার করে বন্ধুদের জানিয়ে দিন

Similar Posts