যেকোন মাছ ১২০ টাকা প্লেট । বিল বেলাই মাছের হোটেল, গাজীপুর
বিল বেলাই যাবো। ১ সপ্তাহ ধরে প্ল্যান হচ্ছে, কিন্তু এক্সিকিউট হচ্ছে না। গতকাল রাতে সিদ্ধান্ত হলো, আজ যাবোই।
দুপুর ১২টায় ফার্মগেট থেকে যাত্রা শুরু হলো। জাহাঙ্গীরগেটের সিগন্যালে হালকা জ্যাম খেয়েও বেশ দ্রুত ৩০০ ফিট চলে আসলাম।
সোমবার দুপুর, গাড়ি নেই বললেই চলে। কাঞ্চন ব্রিজের আগে বামে মোড় নিয়ে ট্রাকের জ্যামে পড়লাম। তবে এখানেও তেমন কষ্ট হলো না। অল্প সময়েই ছাড়া পাওয়া গেলো।
শিমুলিয়া বাজার পৌঁছানোর পর শুরু হলো আসল খেলা। পিচঢালা মসৃণ রাস্তা। বেশ সরু তবে গাড়ি যেতে পারবে। তবে কথা সেটা না, কথা হচ্ছে রাস্তা গিয়েছে শীতলক্ষ্যা নদীকে সাথে নিয়ে।
বিশাল বিশাল মালবাহী বলগেট দেখা যাচ্ছে রাস্তা থেকেই। ছোটখাটো নৌকাও দেখা গেলো মাছ ধরছে। শুধু এই জায়গা দেখতেই এখানে আবার আসবো ঠিক করলাম।
রাস্তার দু’পাশ জুড়ে গাছের সারি। এমনিতেই হেমন্তের রোদ তেমন কড়া হয় না। তার উপর গাছের ছায়া। মাছ খেতে যাওয়া তো উসিলা। আসলে তো এই জার্নির জন্যই আসা।
বিল বেলাই মাছের হোটেল রাস্তার পাশে অবস্থিত। দু’পাশে যত দূর চোখ যায় পানি আর সবুজ। বর্ষায় কি দারুন লাগবে ভাবতেই আবারো ঠিক করে ফেললাম, বর্ষায় আসতে হবে।
রান্নাঘরে ঢুকে দেখি, গরম গরম গুঁড়া চিংড়ি ভাজা হয়েছে। গুতুম ভাজা হচ্ছে। যে মাছই নেই ১২০ টাকা। মানে ১২০ টাকা পরিমানের দিবে।
- গুড়া চিংড়ি
- গুতুম
- বাইলা
- মলা/ঢেলা
- পুঁটি
- চান্দা
- শিং
- কৈ
- টেংরা ইত্যাদি
আমরা নিলাম গুড়া চিংড়ি, গুতুম, কৈ, টেংরা মাছ। পুঁটি মাছ নিতে চেয়েছিলাম কিন্তু বেশি সময় লাগবে তাই খাওয়া হলো না।
গুড়া চিংড়ি আহামরি লাগে নাই। কয়েকদিন আগেই জলিলের চিংড়ি খেয়ে আসছি। সেই স্বাদ এখনো মুখে লেগে আছে। চিংড়ি ভালো না লাগাটাই তাই স্বাভাবিক। তবে খারাপও না।
গুতুম মাছ বেশ মজা ছিলো। এটা খেয়ে ভালো লাগছে।
কৈ মাছ আমাদের দুই পিস দিয়েছে ১২০ টাকায়। মাছের সাইজ মাঝারি ছিলো। মাছের সাইজ এরচেয়ে ছোট হলে সম্ভবত ৩/৪ পিস দিতো। কৈ মাছও ভালো লেগেছে। চাষের কৈ এর মত স্বাদ না।
টেংরা মাছও আহামরি লাগে নাই। ঠিক আছে, খারাপ না। আবার খুব ভালোও না।
তবে ওরা মিক্সড সালাদ দেয়। এটার জন্য সাধুবাদ দিতেই হয়। যে রেস্টুরেন্টই মিক্সড সালাদ দেয়, তাদের প্রতি আমার আলাদা সম্মান রয়েছে।
আমরা দুজন না হয়ে ৩-৪ জন হলো আরো বেশি মাছ নেওয়া যেত। পরের বার আরো বেশি মানুষ যেতে হবে।
তাহলে ঘটনা কি দাঁড়াচ্ছে? শুধু মাছ খেতে এখানে আসতে হবে এমন না। মানে এমন আহামরি স্বাদ না যার জন্য এখানে আসবো। কিন্তু তবু আবার যাবো, কিন্তু কেনো? রাস্তাটার জন্য। রেস্টুরেন্টের আশেপাশের নৈসর্গিক সৌন্দর্যের জন্য।
মাছ খেয়ে ওদের দই ট্রাই করি। দই ভালো ছিলো। প্রথমে দুইজনে একটা নেই। পরে আরেকটা নিতে হয়। মিষ্টি দই।
ভালো কথা, মাছ ছাড়া এখানে দুপুরে আর কিছু পাওয়া যায় না। তবে বিকেল/সন্ধ্যায় গ্রিল চিকেন পাওয়া যায়।
দোকানে খাবার পরিবেশন শুরু হয় দুপুর ১টা থেকে, চলে রাত ১০টা পর্যন্ত।
ভরপেট খেয়ে এবার ফেরা যাক। শিমুলিয়া বাজারে এসে চা ব্রেক। আমি তো চা খাই না। মালাই পাওয়া গেলো। বিশাল এক কাপ মালাই খেয়ে শেষটা দারুন হলো।
আমরা যে রুট দিয়ে গিয়েছে,
পূর্বাচল ৩০০ ফিট রোড হয়ে কাঞ্চন ব্রিজের আগে বামে ঢুকি। এরপর গুগল ম্যাপ দেখে শিমুলিয়া বাজার। শিমুলিয়া বাজার থেকে এবার গুগল ম্যাপে বিল বেলাই মাছের হোটেল ডিরেকশন সেট করি। ম্যাপে দেখানো পথ ধরে যেতে থাকি।