৩ দিনে ৪ জেলা ভ্রমণ – নড়াইল (পর্ব-৪, শেষ পর্ব)
মজার ব্যাপার হচ্ছে, ঝিনাইদহ থেকে নড়াইল যেতে আগে যশোর যেতে হবে। বারোবাজার থেকে বাসে যশোর মনিহার। মনিহারে পানি বিয়োগ করে নড়াইলের লোকাল বাসে চড়লাম।
ঝিনাইদহর পর্ব পড়ে না থাকলে এখানে ক্লিক করে পড়ে আসুন
হাতে সময় কম। হাটবাড়িয়া জমিদার বাড়ি আর বাঁধা ঘাট দেখার ইচ্ছা। দুই জায়গায় যাওয়ার সময় পাবো নাকি তা নিয়ে কিছুটা চিন্তিত।
নড়াইলের মুচিপোল নামক জায়গায় বাস নামিয়ে দিলো। অটো রিজার্ভ করে হাটবাড়িয়া জমিদার বাড়ির পথে ছুটলাম।
২০১৭ সালে নড়াইল জেলা প্রশাসক হাটবাড়িয়া ইকোপার্ক ও প্রজাপতি পার্কের উদ্ভোধন করেন। পার্কের সামনে নেমে একজনের কাছে জমিদার বাড়ির কথা জিজ্ঞাসা করলে, ঘন জঙ্গলের মত একটা জায়গা দেখিয়ে বললো ওই তো জমিদার বাড়ি।
চিত্রা নদীর পাড়ে অবস্থিত হাটবাড়িয়া জমিদার বাড়ির গোড়াপত্তন হয় আনুমানিক ১৯০০ শতকের শুরুতে জমিদার জয় নারায়ণ রায়ের মাধ্যমে। এই জমিদার বংশের শেষ জমিদার ছিলেন জিতেন্দ্রনাথ রায়। এই বাড়ি অনেকের কাছে জিতেন্দ্রনাথ রায়ের বাড়ি হিসেবেও পরিচিত। ভারতবর্ষ ভাগ হওয়ার আগেই জমিদাররা ভারতে পাড়ি জমান। (তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া)
ধ্বংসপ্রায় জমিদার বাড়ি ঘুরে ইকোপার্ক চত্বরেও ঢুঁ মারলাম। কাছেই চিত্রা নদী। নদীতে বেশ স্রোত।
হাটবাড়িয়া জমিদার বাড়ি থেকে ভ্যানে রওনা হলাম বাঁধা ঘাট। চিত্রা নদীর পাড়ে অবস্থিত বাঁধা ঘাটে আমরা যখন পৌঁছাই তখন সন্ধ্যা হই হই। বিকেলের শেষ আলোর পুরোটা সময় ঘাটেই বসে রইলাম। বিকেলে বেশ ভীড় হয়। কপোত-কপোতি ছাড়া পরিবার নিয়েও অনেকে এসেছে।
নড়াইলের কার্তিক কুন্ডুর মিষ্টির বেশ সুনাম শুনে সেখানে গেলাম। বাঁধা ঘাট থেকে কাছে হাঁটা দূরত্ব। যা যা খেলাম,
- প্যারা সন্দেশ
- ক্ষীর সন্দেশ
- ছানার জিলাপি
- ছোট রসগোল্লা
মনে রাখার মত আহামরি কিছু লাগলো না। অবশ্য দেশের নানা প্রান্তের এত এত মিষ্টির স্বাদ গ্রহণের সৌভাগ্য হয়েছে, খুব সহজে এখন আর কোন কিছু মনে বা জিহ্বাতে দাগ কাটে না।
তবে ছানার জিলাপির কথা দীর্ঘদিন মনে থাকবে। এত মিষ্টি, এত মিষ্টি। পুরো মুখ মিষ্টতায় ভরে গিয়েছিলো। যারা অত্যাধিক মিষ্টি পছন্দ করেন তাদের কাছে ভালো লাগতে পারে।
কার্তিক কুন্ডুর মিষ্টি খাওয়ার মধ্যে দিয়ে আমাদের এই দীর্ঘ সফরের সমাপ্তি ঘটলো। এবার বাড়ি ফেরার পালা।
নড়াইল থেকে সরাসরি ঢাকার বাস আছে। কিন্তু বাস ছাড়বে রাতে। এদিকে এতটা সময়টা শুধু শুধু বসে থাকার পক্ষপাতি আমি না।
লোকাল বাসে করে প্রথমে কালনাঘাট চলে গেলাম। ভাটিয়াপাড়াতে সারারাত বাস পাওয়া যায় জানি। এই ভরসাতেই মূলত যাওয়া।
আমরা যখন যাই তখনো কালনা সেতুর উদ্ভোধন হয় নি। ট্রলারে নদী পার হলাম।
ঘাট থেকে অটো নিলাম ভাটিয়াপাড়ার জন্য। অটোওয়ালা আক্ষরিক অর্থে উড়িয়ে নিয়ে চললো।
ভাটিয়াপাড়া পৌঁছে দেখি জমজমাট অবস্থা। এমন কোন পরিবহন নাই যার কাউন্টার এখানে নেই।
রিজভী এক দোকানে হালিম অর্ডার করলো। এত ঝাল এক চামচ খেয়েই রেখে দিলাম।
ফাল্গুনী নামক এসি বাস ভাড়া চাইলো ৮০০ টাকা। এত অল্প দূরত্বে এত টাকা ভাড়া দিতে রাজি না। দামাদামি করে ভাড়া ৬০০ টাকায় নামলো।
৬০০ টাকাও বেশি। আরেকজন দেখলাম ৫০০ টাকায় বন্দোবস্ত করলো। যাই হোক সারাদিনের জার্নির ধকল শেষে এখন একটা প্রশান্তির ঘুম দরকার…
আমার লেখা ই-বুক কিনতে এখানে ক্লিক করুন
মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, নড়াইল ৪ জেলা ভ্রমণের যাতায়াত বৃত্তান্ত
- দিন-০ (৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২)
- গাবতলী থেকে নন এসি শ্যামলী বাসে মেহেরপুর ৬৫০ টাকা
- দিন-১ (১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২)
- মেহেরপুর স্ট্যান্ড থেকে ব্যাটারি রিকশায় কাশারী বাজার, বাসুদেব ১০ টাকা
- বাসুদেব থেকে হেঁটে বড় বাজার মোড়, গিয়াস মিষ্টান্ন
- বড় বাজার থেকে ব্যাটারি রিকশায় বাসুদেব মিষ্টান্ন ১০ টাকা
- বাসুদেব থেকে রিকশায় মেহেরপুর বাসস্ট্যান্ড ১০ টাকা
- মেহেরপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে অটোতে আমঝুপি বাজার ২০ টাকা
- আমঝুপি থেকে অটোতে নীলকুঠি ১০ টাকা
- নীলকুঠি থেকে ভ্যানে আমঝুপি বাজার ১০ টাকা
- আমঝুপি বাজার থেকে অটোতে মেহেরপুর বাসস্ট্যান্ড ১৫ টাকা
- মেহেরপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে অটোতে মুজিবনগর ৪০ টাকা
- ভ্যানে মুজিবনগর কমপ্লেক্স, স্বাধীনতা সড়ক(বর্ডার) ঘুরে কেদারগঞ্জ বাজার ১০০ টাকা (এখানে ভাড়া ৫০ টাকা হলে ঠিক ছিলো। আমরা না চিনায় কথার ফাঁদে ফেলে বেশি টাকা নিছে)
- কেদারগঞ্জ থেকে অটোতে আটকবর বাসস্ট্যান্ড ২৫ টাকা
- আটকবর বাসস্ট্যান্ড থেকে হেঁটে আটকবর কমপ্লেক্স
- আটকবর বাসস্ট্যান্ড থেকে অটোতে ডিসি ইকোপার্ক, তালসারি রোড ২০ টাকা
- ট্রলারে ইকো পার্কের দীঘি ঘোরা ৫০ টাকা
- ইকো পার্ক থেকে অটোতে কার্পাসডাঙ্গা ৩০ টাকা
- কার্পাসডাঙ্গা থেকে অটোতে কেরু চিনিকল ৩০ টাকা
- কেরু চিনিকল থেকে ভ্যানে দর্শনা বর্ডার(জয়নগর) ৭০ টাকা (রিজার্ভ)
- জয়নগর থেকে অটোতে দর্শনা রেলস্টেশন ৫০ টাকা
- দর্শনা রেলস্টেশন থেকে ট্রেনে চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশন ১৫ টাকা
- চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশন থেকে ভ্যানে ভিআইপি হোটেল ১০ টাকা
- দিন-২ (১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২)
- হোটেল থেকে ভ্যানে রেল বাজার কালিপদ মিষ্টান্ন ৫ টাকা
- রেল বাজার থেকে অটোতে ঠাকুরপুর মসজিদ ৫ টাকা
- ঠাকুরপুর মসজিদ থেকে অটোতে বড় বাজার, পায়রা চত্বর ১০ টাকা
- বড় বাজার থেকে অটোতে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড ৫ টাকা
- পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে ভ্যানে ঘোলদাড়ী বাজার ১৫০ টাকা (রিজার্ভ)
- ঘোলদাড়ী বাজার থেকে ভ্যানে শাহী মসজিদ ১০ টাকা
- ঘোলদাড়ী শাহী মসজিদ থেকে ভ্যানে ঘোলদাড়ী বাজার ৫ টাকা
- ঘোলদাড়ী বাজার থেকে লেগুনায় আলমডাঙ্গা ৩০ টাকা
- আলমডাঙ্গা থেকে ভ্যানে বধ্যভূমি ৫ টাকা
- বধ্যভূমি থেকে অটোতে হাউসপুর ব্রিজ মোড় ১২.৫ টাকা
- হাউসপুর ব্রিজ থেকে অটোতে জামজামী বাজার ২০ টাকা
- জামজামী থেকে অটোতে হরিণাকুন্ড বাজার ৫০ টাকা
- হরিনাকুন্ড বাজার থেকে অটোতে পরিতোষ ঠাকুর মোড় ৭৫ টাকা (লোকাল ভাড়া একজনের ৫০ টাকা। আমরা ৩ জনের সিট নেওয়ায় ১৫০ টাকা লেগেছে)
- পরিতোষ ঠাকুর মোড় থেকে ভ্যানে আরাপপুর চত্বর ৫ টাকা
- আরাপপুর থেকে ভ্যানে মিয়ার দালান ১০ টাকা
- মিয়ার দালান থেকে ভ্যানে আরাপপুর চত্বর ১০ টাকা
- আরাপপুর থেকে অটোতে ঢোল সমুদ্র দীঘি ২৫ টাকা
- ঢোল সমুদ্র দীঘি থেকে অটোতে পায়রা চত্বর ২৫ টাকা
- পায়রা চত্বর থেকে হেঁটে হোটেল ড্রিম ইন ইন্টারন্যাশনাল
- ড্রিম ইন থেকে হেঁটে হোটেল রেডিয়েশন
- দিন-৩ (১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২)
- পায়রা চত্বর থেকে ব্যাটারি রিকশায় বিষয়খালি বাজার ৭০ টাকা
- বিষয়খালি বাজার থেকে অটোতে কালিগঞ্জ বাজার ২০ টাকা
- কালিগঞ্জ বাজার থেকে হাসপাতাল মোড়, কোলা রোড ১০ টাকা
- কোলা রোড থেকে লাটা গাড়িতে(স্যালো ইঞ্জিন) মল্লিকপুর বাজার ২৫ টাকা
- বাজার থেকে হেঁটে মল্লিকপুর বটগাছ
- মল্লিকপুর বাজার থেকে লাটা গাড়িতে বসুন্ধরা বাজার ১০ টাকা
- বসুন্ধরা বাজার থেকে অটোতে বারোবাজার ৩০ টাকা
- বারোবাজার থেকে রিজার্ভ ভ্যানে শুকুর মল্লিক, পীর পুকুর, জোড়বাংলা, গলাকাটা, গোড়া মসজিদ ১২০ টাকা
- বারোবাজার থেকে বাসে যশোর মনিহার ৪০ টাকা
- মনিহার থেকে লোকাল বাসে নড়াইল ৭০ টাকা
- নড়াইল মুচিপোল থেকে রিজার্ভ অটোতে হাটবাড়িয়া জমিদার বাড়ি ৫০ টাকা
- হাটবাড়িয়া জমিদার বাড়ি থেকে ভ্যানে বাঁধা ঘাট ২০ টাকা
- বাঁধা ঘাট থেকে হেঁটে কার্তিক কুন্ডু মিষ্টি
- কার্তিক কুন্ডু থেকে অটোতে মুচিপোল ৫ টাকা
- মুচিপোল থেকে অটোতে নড়াইল বাসস্ট্যান্ড ১০ টাকা
- বাসস্ট্যান্ড থেকে লোকাল বাসে কালনাঘাট ৪০ টাকা
- কালনাঘাট থেকে ট্রলারে ওইপাড় ১০ টাকা
- কালনাঘাট থেকে অটোতে ভাটিয়াপাড়া মোড় ২০ টাকা
- ভাটিয়াপাড়া থেকে ফাল্গুনী বিজনেস ক্লাস এসি বাসে গুলিস্তান ৬০০ টাকা
মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, নড়াইল ৪ জেলা ভ্রমণে যা যা দেখলাম
- মেহেরপুর
- গিয়াস মিষ্টান্ন ভান্ডার
- বাসুদেব মিষ্টান্ন
- আমঝুপি নীলকুঠি
- মুজিবনগর
- স্বাধীনতা সড়ক (বাংলাদেশ-ভারত বর্ডার)
- চুয়াডাঙ্গা
- আট কবর
- তালসারি রোড
- ডিসি ইকো পার্ক
- কেরু এন্ড কোং
- জয়নগর দর্শনা স্থল ও রেল বন্দর
- দর্শনা রেলস্টেশন
- চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশন
- কালিপদ দাস এন্ড সন্স
- ঠাকুরপুর জামে মসজিদ
- ঘোলদাড়ী শাহী মসজিদ
- আলমডাঙ্গা বধ্যভূমি
- ঝিনাইদহ
- মিয়ার দালান
- বারোমাথা খেজুর গাছ
- ঢোল সমুদ্র দীঘি
- পায়রা চত্বর
- সুইট হোটেল
- মল্লিকপুর বটগাছ
- শুকুর মল্লিক মসজিদ/হাসিলবাগ মসজিদ
- পীর পুকুর মসজিদ
- নুনগোলা মসজিদ
- জোড়বাংলা মসজিদ
- গলাকাটা মসজিদ
- গোড়া মসজিদ
- নড়াইল
- হাটবাড়িয়া জমিদার বাড়ি
- বাঁধা ঘাট
- চিত্রা নদী
মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, নড়াইল ৪ জেলা ভ্রমণের খাবার বৃত্তান্ত
- মেহেরপুর
- গিয়াস মিষ্টান্ন ভান্ডার
- চমচম ১০ টাকা
- কালো জাম ১০ টাকা
- ছানা ২০ টাকা
- বাসুদেব
- সাবিত্রী ১৫ টাকা
- গিয়াস মিষ্টান্ন ভান্ডার
- চুয়াডাঙ্গা
- কালিপদ দাস এন্ড সন্স,
- সন্দেশ ২০ টাকা
- বরফি সন্দেশ ২০ টাকা
- ছোট চমচম ১৫ টাকা
- কালোজাম ২০ টাকা
- পানতোয়া ২০ টাকা
- কালিপদ দাস এন্ড সন্স,
- ঝিনাইদহ
- সুইট হোটেল (রাতের খাবার)
- চুই খাসি ১৮০ টাকা
- ভাত ২০ টাকা
- খাসির মাথা দিয়ে ডাল ৩০ টাকা
- সবজি ৩০ টাকা
- বোরহানি ৪০ টাকা
- সুইট হোটেল (সকালের নাস্তা)
- পরোটা ১৩ টাকা
- খাসির লটপটি ১৩০ টাকা
- ডাল-ভাজি ৩০ টাকা
- দই ৩০ টাকা
- সুইট হোটেল (রাতের খাবার)
- নড়াইল
- কার্তিক কুন্ড,
- পেড়া সন্দেশ ২০ টাকা
- ক্ষীর সন্দেশ ২০ টাকা
- ছানার জিলাপি ৩০ টাকা
- ছোট রসগোল্লা ১০ টাকা
- কার্তিক কুন্ড,
- পর্ব-১ঃ মেহেরপুর ভ্রমণ
- পর্ব-২ঃ চুয়াডাঙ্গা দর্শন
- পর্ব-৩ঃ ঝিনাইদহ ভ্রমণ
Never lose hope, never stop travelling