২৮ ডিসেম্বর, ২০১৫ এর পর আর তেমন হাঁটাহাঁটি করা হয় নাই, আর হলেও নোট লেখা হয় নাই। দুই মাস চার দিন পর আজকে আবার নোট লিখতে বসলাম। অনেকদিন থেকেই ইচ্ছা করছিলো যে আবার আগের মত হাঁটাহাঁটি করি কিন্তু বিভিন্ন অজুহাতে তা হয়ে উঠছিলো না।
আজ যখন মালিবাগ মোড় থেকে বাসায় যাওয়ার জন্য হাঁটা শুরু করলাম তখনই মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম, যাই হোক না কেনো আজ হেঁটেই বাসায় যাবো। ৮টা ৫৩ মিনিটে হাঁটা শুরু করলাম। শুরুতেই অনেক জোরে জোরে হাঁটা শুরু করলাম। হেঁটে মজাও পাচ্ছিলাম আজ। মগবাজার ফ্লাইওভারের কাজ করা দেখতে দেখতে হাঁটতে থাকলাম। ফুরফুরা মনে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ এক ইটে জোরে পাড়া দিলাম আর মনে হলো আমার ডান পায়ের বৃদ্ধা আঙ্গুল শেষ। অন্যদিন হলে সাথে সাথে রিকশা বা বাসে উঠে পড়তাম কিন্তু আজ প্রতিজ্ঞা বদ্ধ হেঁটেই বাসায় যাবো। আঙ্গুলে বেশ ব্যাথা করলেও হাঁটতে থাকলাম আর কখন যে বাংলা মোটর পৌঁছে গেলাম নিজেও টের পাই নাই। আঙ্গুলের ব্যাথাও ততক্ষনে কমে গেছে।
ফার্মগেট এসে আরেক ইটের সাথে বাড়ি খেয়ে এবার বাম পায়ের বৃদ্ধা আঙ্গুল ছিলে গেল, রক্ত বের হলো দেখে আঙ্গুলে পানি দিলাম। পানি দিয়ে আবার হাঁটা শুরু করলাম। একটু পরেই টের পেলাম রক্ত এখনো বের হচ্ছে। স্যান্ডেলে রক্ত জমাট বেঁধে গেছে কিন্তু আমার কোন থামাথামি নেই। আরো দ্বিগুন উৎসাহে আমি হেঁটে যাচ্ছি।
কলেজ গেটের কাছে এসে আবার পায়ে বাড়ি খেলাম। এতদিন ধরে হাঁটাহাটি করতেছি কোনদিন এত বাধার সম্মুখীন হই নাই। পায়ে এত ব্যাথা করছিলো, মনে হচ্ছিলো রাতে জ্বর আসবে। এতকিছুর পরও আমার চিন্তা ছিলো একটাই আজ হেঁটে বাড়ি যাবো।
একটানা প্রায় ২ ঘন্টা হেঁটে কল্যানপুর আসার পর পা গুলো এবার বলা শুরু করলো, আর তো পারছি না। এবারতো ক্ষমা করো। আমি ওদের কথা পাত্তা দিলাম না। শরীরটাকে একরকম টেনেই নিয়ে চললাম। অবশেষে ১১.২০ মিনিটে বাসায় এসে পৌঁছালাম। হাঁটা হয়েছে প্রায় ১১ কিলোমিটার।
আজকের হাঁটার রুট,
মালিবাগ মোড়-> মৌচাক মোড়-> মগবাজার মোড়-> বাংলা মোটর মোড়-> কাওরানবাজার মোড়-> ফার্মগেট মোড়-> খামার বাড়ি মোড়-> সংসদ ভবন-> আসাদ গেট-> কলেজ গেট-> শ্যামলী-> কল্যানপুর-> মধ্য পাইকপাড়া-> মর্নিং স্টার স্কুল-> বাসা
রোজ শুক্রবার
০৪ মার্চ, ২০১৬
- হন্টন প্রজেক্ট
Feature Image by deviantart